মিস ইয়ার এর অর্থ হচ্ছে অস্থায়ী বিয়ের ব্যবস্থা । সুন্নি শরিয়া আইন অনুযায়ী এ বিয়ের বৈধতা ও আছে। এ আইনের মাধ্যমে একজন পুরুষ তার বিয়ে করা বউ এর কোন ধরনের ভরণপোষণ বা অন্য কোনো দায়িত্ব পালন করেন না। তবে তারা উভয়ের সম্মতিক্রমে চাইলে একসাথে থাকতে পারবেন এবং শারীরিক সম্পর্ক করতে পারবেন। দুই পক্ষের এমন বিয়েতে থাকে নগদ টাকার বিনিময়। নগদ টাকার মাধ্যমে তারা এই বিয়েটি করে থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের মধ্যে এগ্রিমেন্ট হয়ে থাকে।
তবে এগ্রিমেন্ট এর মাধ্যমে তারা চাইলে এ বিয়ের সময়ের মধ্যেই আবার তারা বিয়ে করতে পারবেন। তবে তালাক দিতে ও কোন ধরনের বাধা থাকে না। তবে লোকলজ্জার ভয়ে এমন বিয়ের কথা তারা নিজেদের মধ্যেই গোপন রাখে। সম্প্রতি দেখা গেছে মুসলিম কয়েকটি দেশে এ ধরনের শর্তহীন বিয়ের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মিস ইয়ার আসলে একাকী জীবনের এবং বিবাহহীন জীবনের একটা মিশ্রন বলা যেতে পারে । এটি পরকীয়া বা বহুবিবাহের যারা আগ্রহী তাদের জন্য খুবই উপযোগী। তবে বিশ্লেষকদের মতে এ ধরনের বিবাহের মাধ্যমে দিনদিন নারী নির্যাতন এর পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া অবিবাহিতরা তাদের অবৈধ সম্পর্কের সুযোগ নিতে পারে , আর ইসলাম বিয়ের বাইরে যে কোনো শারীরিক সম্পর্ককে যেহেতু সমর্থন করে না সে ক্ষেত্রে এই ধরনের বিয়ে কতটা যৌক্তিক সেটার প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।
বিশ্লেষকদের মতে এ ধরনের বিয়ে শুধুমাত্র যে সৌদির স্থানীয়দের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা নয় সেখানে অবস্থানকারী বিভিন্ন প্রবাসীদের মধ্যেও এ ধরনের বিয়ের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ডেটিং অ্যাপস ও ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে তারা তাদের মধ্যে সঙ্গী খুঁজছেন এবং তারা একত্রিত হয় আর সম্মতিক্রমে তারা তাদের মধ্যে বিয়ে করে ফেলেন। এ বিয়েতে যেহেতু নেই কোন দেনা-পাওনার হিসাব কিংবা কোন ধরনের দায় বাধ্যকতা সুতরাং এ ধরনের বিয়ের বেশিদিন টিকে না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন বিয়ে মাত্র দেড় থেকে দুই মাস স্থায়ী হয়।
সৌদির এক স্থানীয় মতে, তিনি বলেছেন , আমার দেখা অনেকেই আছেন যারা এধরনের বিয়ে করেছেন এবং তারা একাধিকবার বিয়ে করেছেন একাধিক জনের সাথে এবং তারা তালাক ও দিয়েছেন, শুধু সমাজের পুরুষরা না সমাজের মহিলাদের মধ্যেও এমন বিয়ের পরিমাণ বা এমন বিয়ের প্রতি ইচ্ছা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, আগে এ ধরনের ঘটনা তেমন একটা দেখা যেত না কিন্তু ইদানিং এর পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে গেছে। যারা এধরনের বিয়ে করে তারা আসলে সমাজে মান-সম্মানের ভয়ে তাদের এইসব বিয়ে প্রকাশ করতে চায় না।
পরিচয় দিতে অনিচ্ছুক আরেকজন বলেন: আমি নিজেও এমন দুইটা বিয়ে করেছিলাম এবং ওইসব বিয়ের খবর আমি আমার পরিবার জনকেও জানইনি, এবং আমার প্রথম যেটা বিয়ে হয়েছিল সে ক্ষেত্রে কেবল এক মাসের মতো আমরা একসাথে সহবাস করছিলাম এবং এরপরে তালাক দিয়ে দেই এবং দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রেও আমরা এক মাসের মত ছিলাম।
No comments:
Post a Comment